ঢাকা শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫

কোন কাজে আসছেনা ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু

মনজু বিজয় চৌধুরী, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২৫, ০৮:২৪ পিএম

কোন কাজে আসছেনা ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু

ছবি-বর্তমান বাংলাদেশ।

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী নলু নদে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু কোন কাজে আসছেনা। বর্ষা মৌসুমে সেতুর নিচ দিয়ে নৌকা যেতে না পারায় স্থানীয় বাসিন্দা, বালু ব্যবসায়ী, কৃষক ও জেলেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।


সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যা কবলিত এলাকায় নির্মিত মূল সেতুটি তুলনামূলকভাবে পিলার বসিয়ে অনেক নিচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি কাঁচা সংযোগ সড়কে নিচু করে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। চলছে কালভার্ট নির্মাণের কাজও।


জানা যায়, মৌলভীবাজার এলজিইডির অধিনে ‘রুরাল এক্সেস রোড ইমপোভমেন্ট প্রজেক্ট’ (রারিপ) এর আওতায় ৪৬ মিটার দৈর্ঘ্য আরসিসি গার্ডার ব্রিজ, সংযোগ সড়ক ও ছোট কালভার্ট নির্মাণ করতে ২০২০ সালের ৩ মার্চ পাওয়া প্রজেক্টের ‘ভেরিয়েশন কন্ট্রাক্ট’ মূল্য ধরা হয়েছে ৪ কোটি ১২ লাখ ৫ হাজার ৩শ ৬৫ টাকা। যার ‘অরিজিনাল কন্ট্রাক্ট’ মূল্য ৩ কোটি ৫৯ লাখ ৬৭ হাজার ৭শ ৩৩ টাকা। কাজটি ২০২১ সালের ৮ মার্চ শেষ হবার কথা থাকলেও পুনঃসংশোধন করে মেয়াদ বাড়িয়ে সমাপ্তির তারিখ দেওয়া হয় ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। অতিরিক্ত প্রায় আড়াই বছর চলে গিয়ে মূল সেতুর কাজ শেষ হলেও নতুন কালভার্ট ও সংযোগ সড়কের কাজ এখনো চলমান রয়েছে। শেরপুর জেলার ধ্রুব মোশারফ (জেবি) নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। 


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, তৎকালীন আ’লীগ সরকারের আমলে তৈরি এ সেতুটি নির্মাণ করার সময় স্থানীয় আ’লীগ নেতারা মিলে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সেতুর টাকা হরিলুট করে খেয়েছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উজানের পাহাড়ি বালুমহাল থেকে বালু ভর্তি নৌকা নিয়ে মাঝিরা এই নদ দিয়ে কুশিয়ারা নদীতে বের হয়ে সিলেটের বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় বালু বিক্রি করতেন। বর্ষায় কৃষকরা বোরো ধান বোঝাইসহ জেলেরা নৌকা নিয়ে যাতায়াত করতেন। নিচু করে সেতু নির্মাণ করায় ৩ বছর ধরে এ পথে নৌকা আসা যাওয়া করতে পারে না।


স্থানীয় বকশিপুর গ্রামের বাসিন্দা ও মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান (এমবিবিএস) বলেন, এই সেতুটি মানুষের যাতায়াতের সুবিধা ও নিচ দিয়ে যাতে নৌকা যায় এর আলোকে নির্মাণ করার কথা ছিল। কিন্তু এখন আমরা দেখছি অনেক নিচু করে সেতু নির্মিত হয়েছে। বর্ষাকালে সেতুর নিচ দিয়ে ছোট ট্রলার চলাচল করলে দুর্ঘটনার শিকার হবে।


ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এক সহযোগী জানান, প্রকৌশলী যেভাবে ডিজাইন ব্যবস্থা করেছেন, আমরা সেভাবেই কাজ করেছি।জানতে চাইলে রাজনগর এলজিইডি প্রকৌশলী রাজু সেন বলেন, সেতুর কাজ শুরুর সময়ে আকরাম হোসেন তানুকদার নামের প্রকৌশলী ছিলেন। আমি শুধু ছোট কালভার্ট ও সংযোগ সড়কের কাজ করছি। 


মৌলভীবাজার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ আব্দুল্লাহ বলেন, এখন তো নৌকা চলে না, নৌকার ব্যবহার কমে গেছে। তবে, আমি এসে ফিনিসিং এর কাজ করেছি। আমার আগের প্রকৌশলী আজিম উদ্দিন সরদার প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করেছেন।
 

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!