নওগাঁর রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান মৃধার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ছাত্র অভিভাবক ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এরই মধ্যে সোমবার স্থানীয় বেশকিছু ব্যক্তি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অভিযোগে রাণীনগর বাজারে লিফলেট বিতরণ করেছেন। তাদের অভিযোগ- অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান বাড়লেও, শিক্ষার মান কমেছে রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম-দুর্নীতি, অদক্ষতা, স্বেচ্ছাচারিতা ও অতিরিক্ত ফি আদায় করায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও স্থানীয়রা।
অভিযোগে জানা যায়, গত ৫ আগষ্টের পর রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ বাগিয়ে নেন ধর্ম বিষয়ের (ইসলাম) শিক্ষক আব্দুস সোবহান মৃধা। এরপর থেকে তিনি জড়িয়ে পড়েন অনিয়ম-দুর্নীতি ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ অর্থ আত্মসাতে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান মৃধার অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অদক্ষতার কারণে বিদ্যালয়ের সরকারী, বেসরকারী উন্নয়নের বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন, সেশন ফি, ক্রীড়া ফি ও জরিমানা টাকা বিধি বহির্ভূতভাবে অধিকাংশ রশিদবিহীন আদায় করেন তিনি। সেশন ফি বিভিন্ন খাতওয়ারী অর্থ তিনি ব্যয় না করে নিজেই আত্মসাৎ করেছে। গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের পাওনা কিছু মওকুফ করার সুযোগ থাকলেও তিনি মওকুফ না করে নিষ্ঠুরতম আচরণের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে পুরো অর্থ আদায় করে থাকেন। এছাড়া দুর্নীতি, অনিয়মের মাধ্যমে স্কুলের যাবতীয় অর্থ ব্যক্তিগত একাউন্টে গচ্ছিত রাখেন। বিদ্যালয়ের বাসায় বসবাস করলেও নিয়মমত নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ করেন না তিনি। এছাড়া বিদ্যালয় চলাকালে অধিকাংশ সময় উপস্থিত না থাকাসহ তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগের কথা অভিযোগে বলা হয়েছে।
স্থানীয় মাহমুদুর রহমান মধু, গোলাম মোস্তফা, পাভেল রহমানসহ অনেকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এই বিদ্যালয়ে সময়মতো ক্লাস হয়না। শিক্ষার মান নিম্নমুখি। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসবের প্রতিকার চেয়ে এবং ওই শিক্ষকের অনিয়ম দুর্নীতির লিফলেট আমরা বিতরণ করেছি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দেওয়া আছে। দ্রুত এসব অভিযোগের সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি তাদের।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান মৃধা বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একটি পক্ষ আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে যথানিয়মে বিদ্যালয় চালিয়ে আসছি।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়টির সভাপতি মোহাইমেনা শারমীন বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তার কাছ থেকে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। আর তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :