চলতি শীত মৌসুমে নওগাঁর উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র শীতের দাপট। শীত মৌসুমে নওগাঁর তাপমাত্রা ৯ থেকে ১৩ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। কখনো মৃদু শৈতপ্রবাহ আবার কখনো তীব্র শৈতপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। উত্তরের হিমেল হাওয়া শীতের সেই তীব্রতাকে বৃদ্ধি করেছে কয়েকগুন। দিনের বেলায় নিরুত্তাপ সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেঁকে বসছে কনকনে শীত। এমতাবস্থায় হাড় কাপানো শীতের তীব্রতা নাজেহাল হয়ে পড়েছে শীতার্ত অসহায়, দু:স্থ, ছিন্নমূল, ভবঘুরে, হরিজন ও বেদে পল্লীর বাসিন্দা এবং খেটে-খাওয়া শ্রেণির নিম্ম আয়ের মানুষরা। এছাড়া বিভিন্ন শিশু সদনের শিক্ষার্থীরাও শীতের দাপটে নাজেহাল হয়ে পড়েছে।
শীতের এই তীব্রতা থেকে জেলার শীতার্ত মানুষদের রক্ষা করতে সরকারের পক্ষ থেকে গরম কাপড় হিসেবে কম্বল বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন। প্রতিনিয়তই জেলার কোন না কোন স্থানে শীতার্তদের মাঝে সরকারের পক্ষ থেকে শীত বস্ত্র পৌছে দেয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে জেলার ১১টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা নিজেরাই গাড়িতে শীতবস্ত্র নিয়ে ফেরি করে শীতার্তদের মাঝে পৌছে দিচ্ছেন। স্বজনপ্রীতি না করে প্রকৃত শীতার্তদের তালিকা করে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এবং আরো বেশি সংখ্যক শীতবস্ত্র বিতরণ করার দাবী জানিয়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকার শীতার্ত মানুষরা।
শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত শুক্রবার (০৩জানুয়ারী) সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সদর উপজেলার চক রামচন্দ্র উত্তরপাড়া হামিদুর রহমান বেসরকারি শিশু সদন এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা, আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম দপ্তরীপাড়া মাদ্রাসা, দুবলহাটি কাওমিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিং এবং জাবালে নূর হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিং এর আবাসিক শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র হিসেবে প্রায় ৭০০ (সাতশ) টি কম্বল বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়ালের নেতৃত্বে এই শীতবস্ত্রগুলো বিতরণ করা হয়। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম রবিন শীষ, জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান, চলতি শীত মৌসুমে জেলার বিভিন্ন এলাকার দু:স্থ, অসহায়, ছিন্নমূল, ভবঘুরে, হরিজন ও বেদে পল্লীর বাসিন্দার শীতার্তদের মাঝে বিতরণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া ১৫হাজার কম্বল ইতিমধ্যেই বিতরণ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া জেলার ১১টি উপজেলা ও ৩টি পৌরসভার জন্য ৬৭লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে যে অর্থ দিয়ে স্ব স্ব উপজেলার নির্বাহী অফিসারগণ শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল ক্রয় করে ওই সব উপজেলার শীতার্ত অসহায়, দু:স্থ, গরীব, ছিন্নমূল, ভবঘুরে ও শিশু সদনের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে আরো ৫হাজার কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেই শীতবস্ত্রগুলো পাওয়া মাত্রই বিতরণ করা হবে। এছাড়াও মন্ত্রণালয় বরাবর আরো চাহিদা পাঠানো হয়েছে। যতদিন শীতের এই প্রকোপ অব্যাহত থাকবে ততদিন শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :