ঢাকা রবিবার, ০৫ জানুয়ারি, ২০২৫

বাজারের বরাদ্দকৃত সরকারি নলকূপ বসানো হলো জঙ্গলে, দুই বছরেও হয়নি পানির ট্যাংক

নেত্রকোণা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৫, ০১:৫১ পিএম

বাজারের বরাদ্দকৃত সরকারি নলকূপ বসানো হলো জঙ্গলে, দুই বছরেও হয়নি পানির ট্যাংক

ছবি-বর্তমান বাংলাদেশ।

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার ‘সিংধা মোড়’ বাজারের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি গভীর নলকূপ (সাবমার্সিবল) বসানো হয়েছে পাশের একটি জঙ্গলে। দুই বছর আগে সাব-মার্সিবল গভীর নলকূপটি বসানো হলেও এখন  পর্যন্ত এতে ট্যাংকি বসানো হয়নি। স্থানীয় দুই-তিনজন ব্যক্তি নলকূপটির ট্যাংকি নিজেদের বাড়িতে নিয়ে রেখেছেন। ওই দুই ব্যক্তি মোটরের সুইচ নিজেদের দোকানে রেখে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো এটি ব্যবহার করেন। 
ফলে বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী নলকূপটির পানি ব্যবহার করতে পারছেন না।
কাগজেপত্রে নলকূপ বসানো হলেও বাস্তবে এর সুফল ভোগ করতে না পেরে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।

এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ট্যাংকি বসিয়ে নলকূপটির পনি ব্যবহার উপযোগী করার জন্য স্থানীয় মোফাজ্জাল হায়দার নামে এক ব্যক্তি সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালে এডিবির অর্থায়নে সিংধা মোড় বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের সুবিধার্থে একটি নলকূপ বরাদ্দ দেওয়া হয়। তৎকালীন উপজেলা জেলা চেয়ারম্যান মাঈনুল হক কাশেম এই গভীর নলকূপটি (সামার্সিবল) বাজারের ব্যবসায়ী ও বাজারে আসা লোকজনের পানি ব্যবহারের সুবিধার জন্য বরাদ্দ দেন। বরাদ্দ অনুযায়ী নলকূপ বসানোর পর এতে ট্যাংকি বসানো হবে। তবে নলকূপ বসানো হলেও ট্যাংকি উপজেলা চেয়ারম্যানের স্থানীয়  দুই-তিনজন অনুসারী ট্যাংকি তাদের বাড়িতে নিয়ে রাখেন। নলকূপের পানির নিয়ন্ত্রণও থাকে তাদের দুইজনের হাতে। এতে বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী এই নলকূপের পানি ব্যবহার করতে পারছেন না। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় মোফাজ্জল নামে এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন।

এই নলকূপের বরাদ্দের তথ্য জানাতে রাজি হননি উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী অমিত চন্দ্র দে। তিনি বলেন, অনেক  আগের কথা মনে নেই। এই নলকূপটি তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান মাইনুল হক কাশেম এডিবির অর্থায়নে দিয়েছেন। জায়গা নির্বাচন এলাকার লোকজনের সাথে মিলেই করেছেন।

এ বিষয়ে সিংধা গ্রামের অভিযোগকারী মোফাজ্জাল মিয়া বলেন, দুইবছরের বেশি সময় আগে বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর পানির সমস্যা সমাধানের জন্য এই নলকূপটি বসানো হয়েছিল। তবে বাজারের নলকূপ বসানো হয়েছে পাশের একটি  জঙ্গলে। সেখানে ব্যবসায়ী বা সাধারণ মানুষ যেতে পারেন না।  এর ট্যাংকি গ্রামের দুই-তিনজন বাড়িতে নিয়ে রেখে দেয়। ফলে আজ পর্যন্ত কোন মানুষ এই নলকূপের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। মোটরের সুইচ নিজেদের দোকানে লাগিয়ে ওই দুইজনই নিজেদের মতো এটির পনি ব্যবহার করে। ফলে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী এর সুফল পাচ্ছেন না।

গ্রামের মো. সুৃমন মিয়া বলেন, নলকূপটি বাজারের মধ্যে উন্মুক্ত কোন জায়গায় বসানোর কথা ছিল। কিন্তু জোর করে এটি আমার দলিলের জায়গায় জঙ্গলের মধ্যে বাসনো হয়েছে। এতে সাবমার্সিবল মটর লাগানো হলেও দুই বছরেও বসানো হয়নি টাংকি। মটরের সুইচ দুই-তিনজনের কাছে তাকে তারা শুধু ব্যবহার করে তাদের ইচ্ছে মতো। আর কারো কোন সুবিধা হয় না।

বাজারের ব্যবসায়ী মো. সবুজ মিয়াসহ অন্য সবার একই বক্তব্য। দ্রুত টাংকি বসিয়ে এটিকে জনগণের ব্যবহার উপযোগী  করার দাবি তাদের।

বিষয়টি অবহিত করলে আজ বৃহস্পতিবার  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খবিরুল আহসান বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!