বরিশালসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলে দেওয়ানি, ফৌজদারীর পাশাপাশি আদালতগুলোতে বেড়েই চলছে নারী নির্যাতন, যৌতুক, বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা। এর মধ্যে গত ১ বছরে বরিশালে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা বা অভিযোগের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দেড়গুন।
কারন হিসেবে সচেতন মহল মনে করেন পরকিয়া, মোবাইল ফোন আসক্তি, সামাজিক অবক্ষয়, মাদক ও বেকারত্বক। এখনি সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ না করলে বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে নতুন প্রজন্ম সহ আগামীর বাংলাদেশ।
বরিশাল লিগ্যাল এইড সূত্র জানিয়েছে, গত বছরে নারী ও শিশু নির্যাতন, পারিবারিক কলহ সহ কয়েকটি অভিযোগে ৭শ ৭৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৬শ ৯৯টি নিষ্পত্তি করেছেন তারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোবাইলের অপব্যবহার, পরকিয়া প্রেম, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, মাদক, বেকারত্ব ও সামাজিক অবক্ষয় বাড়িয়ে দিয়েছে মামলার সংখ্যা। ফলে আদালতেও বাড়ছে মামলার জট।
আইনজীবী ফামিদা আহমেদ বলেন, আগে স্বামী-স্ত্রী দুজন দুজনকে যথেষ্ট সময় দিতে পারতো কিন্তু এখন কেউ কাউকে সময় দিতে পারছে না। ফলে দুজনেই দুদিকে অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। এসব সমস্যা সমাধানে স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই পরিবারের জন্য সময় বের করতে হবে।
ব্লাষ্ট বরিশাল এর কো-অর্ডিনেটর আইনজীবী সাহিদা আক্তার বলেন, পারিবারিক মূল্যবোধকে আরো জোড়ালো না করলে ভবিষ্যতে এ পরিস্থিতি আরও বাড়বে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাউন্সিলিংকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট সকলকে মামলা ছাড়াই সমস্যার নিষ্পত্তির দিকে জোড় দেয়ার কথা বললেন তিনি।
বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি আব্দুল মন্নান মৃধা বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ রোধে আগে মেয়েদের উপর পারিবারিক নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। তাছাড়া মোবাইল ব্যবহারেও সচেতন হতে হবে। মেয়েরা পারিবারিকভাবে ননদ, শাশুড়ির হাতে নির্যাতনের শিকার হয়। পারিবারিকভাবে নির্যাতিত হয়েই তারা বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়। এসব সমস্যা সমাধানে পারিবারিক সচেতনতা ও শিক্ষার বিকল্প নাই।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, শুধু আইন প্রয়োগই নয় নৈতিকতা সংশোধন সবার আগে প্রয়োজন। তাছাড়া এসব সমস্যা নিয়ে যদি কেউ থানা পর্যন্ত আসে সেগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান করে দেয়া হয়, আর যদি কেউ থানা পর্যন্ত না আসে সেগুলো পারিবারিক ভাবে সমাধান করার কথা বলেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :