ঝালকাঠির রাজাপুরের শুক্তাগড় মাহমুদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ২৬ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দের ভবন সংষ্কার কাজে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় মাদ্রাসার সামনের মাঠে ঘন্টাব্যাপি এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনসুর আহমদ, মোঃ রুস্তম আলী হাওলাদার, মোঃ শাহ আলম মাঝী, মোঃ সুমন, মোঃ ফিরাত ও মোঃ শাওন তালুকদার প্রমুখ। এ ঘটনায় উপজেলার নারিকেল বাড়িয়া গ্রামের মেহেদি হাসান নামে এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, মাদ্রসার উন্নয়নমূলক রিপেয়ারিং কাজের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় এবং পুরাতন মালামাল বাবাদ আরও ১ লাখ ৬০ হাজারসহ সর্বমোট ২৬ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু কাজে ঠিকাদার পুরনো ইট ব্যবহার, অপরিস্কার বালু, পুরাতন প্লাস্টারের উপর আবার প্লাস্টার, ফেলে দেওয়া ইটের রাবিস ব্যবহার করে লিংটনের ঢালাই করে। এছাড়া ছাদ ঢালাইয়ের সময় মালামাল সংকটের কারনে রাত্রে নিম্নমানের ৩নং ইটের খোয়া পরিস্কার না করেই ছাদের ঢালাই এর কাজ চালিয়ে যায়। এ কারনে পরে পানি দিলে ছাদ চুয়ে পানি করতে দেখা যায়। এ ঢালাইয়ের সময় মাদরাসার সুপার এফএম মাহাবুবুর রহমান ও স্থানীয় আনোয়ার হোসেন মিলন ও আরো অন্যান্য শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন কিন্তু তারা প্রতিবাদ করেননি।
বক্তারা আরও অভিযোগ করে জানান, আনোয়ার হোসেন মিলন ও মাদরাসার সুপার মিলে ঠিকাদারের কাছ থেকে সুবিদা নিয়ে নিম্নমানের কাজে করানো হয়। পরে এমন পরিস্থিতি দেভে কিছু কাজ বাকি থাকাকালিন শুক্তাগড় মাহমুদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ আলহাজ মুনছুর আহমেদ এসে কাজ বন্ধ রাখে এবং মাদরাসার সুপারকে সভাপতি ডাকলেও তিনি না এসে আনোয়ার হোসেন মিলনকে পাঠিয়ে দেয়। পরে মিলন গিয়ে গালাগালি করে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। তার পরে স্থানীয় কাজের ত্রুটি ধরিয়ে দিলে মিলন পুলিশ এনে তাদের হয়রানি করে। এমন অবস্থায় মাদরাসার ছাত্রছাত্রীরা এই ভবনে পাঠদান করার জন্যে নিরাপদ নয়, যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন করার দাবি করেন বক্তারা।
অভিযোগ অস্বীকার করে আনোয়ার হোসেন মিলন জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করে এবং টাকা খরচ করে মাদ্রাসার সংষ্কার কাজ এনেছেন। ঠিকাদারকে দিয়ে সবকিছু সঠিকভাবে কাজ করানোর চেষ্টা করায় কিছু লোক বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় এবং শ্রমিকদের মালপত্র ছুড়ে ফেলে মালনমন্দ করেছে। এ কারনে যাতে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা তার চেষ্টা করেছি। ঠিকাদারকে দিয়ে একটি বাথরুমও নির্মান করিয়ে রাখা হচ্ছে।
জানতে চাইলে ঠিকাদার সাজ্জাত আলী জানান, কাজে কোন ত্রুটি হলে তা ঠিক করে দেয়া হবে। স্থানীয় কিছু লোকজন তাদের সাথে দেখা করতে বলে দেখা না করায় বিভিন্ন অভিযোগ তুলে গত ২০ ডিসেম্বর কাজ বন্ধ করে দিয়ে মালপত্র ভেঙে লেবারদের তাড়িয়ে দিয়েছে। কাজে কোন ত্রুটি থাকলে তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিতে পারতো কিন্ত তারা তা করেনি।
রাজাপুর উপজেলা এলজিইিডির প্রকৌশলী অভিজিৎ মন্ডল জানান, ছাদ দিয়ে পানি পরলে উপরে আবার জলছাদ করে দিবে। কাজের ত্রুটি হলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করা হবে বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :