ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার বিষখালী নদী তীরবর্তী আওরাবুনিয়া গ্রামে ১৯৭১ সালে পাক বাহিনী ও তাদের দোসররা নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ২৬ জন মুক্তিকামিদের নির্মমভাবে হত্যা করে। ডিসেম্বর এলে সারদেশে যখন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মারণ ও শ্রদ্ধা জানানো হয়। সেসময় শুধু অজানা থাকার কারণে ওই জনপদের নিহতদের সমাধীর দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না।
অথচ মুক্তিযুদ্ধের সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা লালমোহন গাইন, সূর্যকান্ত গাইন, ইন্দুভুষন হাওলাদার, হরেন ওঝা, নগ্রেন্দ্র হাওলাদার, নির্মল সিকদার, মহেন্দ্র হাওলাদার, ভবরঞ্জন ওঝা, রুহিনী মালী, রাখাল চন্দ্র, মহেন্দ্র চক্রবর্তী, নিবারন হাওলাদার, যজ্ঞেশ্বর হাওলাদার, শ্যামল লাল সিকদার, রাজা মন্ডল, কামিনী বেপারী, নিবারন বেপারী, সারদা বেপারী, মাধব রায়, জয়দেব কুন্ড, জগবন্ধু কুন্ড, যাদব সাধু, চান্দু হাওলাদার, গুরুদাস কর্মকার, শ্যামল চন্দ্র ও উপেন্দ্র হালদারকে বাড়ী থেকে ধরে এনে আওরাবুনিয়া বাজার সংলগ্ন আওরাবুনিয়া মডেল হাই স্কুল মাঠের উত্তর পুর্ব কোনে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নারায়ণ চন্দ্র কাঞ্জিলাল বাবুল ঠাকুর আওরাবুনিয়া মডেল হাই স্কুল মাঠের পুর্ব উত্তর কোনের গণকরের জায়গাটি আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বলেন, এখানে স্বাধীনতার সময় ২৬জন মুক্তিকামী মানুষকে ধরে এনে গুলি করে হত্যা করেছিল পাক-হানাদার বাহিনী। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও এ বধ্যভুমিটি সংরক্ষনের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। নির্মাণ করা হয়নি কোনো স্মৃতিসৌধ বা স্মৃতিফলক।
উপজেলার আওরাবুনিয়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা সুখরঞ্জন হাওলাদার আপেক্ষ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধদের অনেক স্মৃতি ইতিহাস আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। স্মৃতি ধরে রাখার জন্য আওরাবুনিয়ায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ জরুরী হয়ে পড়েছে।
আওরাবুনিয়া মডেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুশীল চন্দ্র মিস্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের কাঁঠালিয়ার সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। স্কুল লাগোয়া গণকবর রয়েছে। সরকারি বেসকারিভাবে কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় শহীদদের বেধির মাটি ধসে সমতল ভুমিতে পরিনত হয়েছে। এখনি উদ্যোগ না নিলে পরবর্তী প্রজম্ম জানতেই পারবেনা এখানে কি ঘটেছিল।
কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.জহিরুল ইসলাম বলেন, আওরাবুনিয়া মডেল হাই স্কুলের সামনের গণকবরে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :