ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫

ছোট ভাই ছাত্রলীগের সেক্রেটারি বড় ভাই বিএনপির সদস্য সচিব !

মনজু বিজয় চৌধুরী, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম

ছোট ভাই ছাত্রলীগের সেক্রেটারি বড় ভাই বিএনপির সদস্য সচিব !

ছবি-বর্তমান বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মৌলভীবাজার জেলার আহবায়ক কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ আব্দুর রহিম রিপন। কিন্তু তার ছোট ভাই বিএনপির রাজনৈতিক প্রধান প্রতিপক্ষ দল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রিপনের ছোট ভাই আব্দুর রাজ্জাক জুয়েল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠন (নিষিদ্ধ) ঢাকা উত্তরা (পশ্চিম) ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। একই সঙ্গে উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র হত্যাকারীদের মধ্যে উন্নতম ভূমিকা পালন করেন এই জুয়েল। এ নিয়ে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ভাবে নেতাকর্মীরা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। বিগত সময়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে মনোনীত সদস্য সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রহিম রিপনের সখ্যতার একাধিক ছবি ফেসবুকে ভাইরাল করছেন নেতাকর্মীরা।


এদিকে রিপনকে সদস্য সচিব মনোনয়ন করার প্রতিবাদে আহ্বায়ক কমিটির ২২জন সদস্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।


জানা যায়, ৩১ ডিসেম্বর বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পত্রে মোহাম্মদ আব্দুর রহিম রিপনকে সদস্য সচিব মনোনীত করা হয়। এই আদেশ প্রকাশিত হওয়ার পরপরই তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেক নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে রিপনের সখ্যতার ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল করেন। রিপনের ছোট ভাই আব্দুর রাজ্জাক জুয়েল নিষিদ্ধ সংগঠন ঢাকা উত্তরা (পশ্চিম) ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন।


গত নভেম্বর ৩২ সদস্য বিশিষ্ট মৌলভীবাজার জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। আহ্বায়ক কমিটির ৫ নম্বরে রয়েছে মোহাম্মদ আব্দুর রহিম রিপনের নাম।


জেলা বিএনপির মনোনীত সদস্য সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রহিম রিপন বলেন, বিগত দিনে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে আমি ছিলাম। বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের পর থেকে প্রতিটি কর্মসূচিতে আমি সক্রিয় ছিলাম। দলের জন্য একনিষ্টভাবে কাজ করায় দল আমাকে মূল্যায়ন করেছে। এটা কতিপয় নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারছেন না।


তিনি বলেন, নভেম্বর মাসে যখন আহ্বায়ক কমিটি হয় তখন আমি সুপার ফাইভে ছিলাম। তখন কেউ কিছু বলেননি। সদস্য সচিব মনোনীত হওয়ার পরই কতিপয় লোক উঠে পড়ে লেগেছেন।


সদ্য সাবেক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, বিগত আওয়ামী লীগের দুঃশাসন আমলে আমরা যখন বাড়ি ঘরে থাকতে পারিনি। তখন মোহাম্মদ আব্দুর রহিম রিপনকে আন্দোলনে পাইনি। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে ভুল বুঝিয়ে রিপনকে সদস্য সচিব মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। মৌলভীবাজারে অনেক ত্যাগী নেতৃবৃন্দ রয়েছেন। তাদেরকে দেয়া যেত। রিপন মৌলভীবাজার ছাত্রদল কিংবা যুবদল করেনি। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে সম্পৃক্ত নেই।


জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে মনোনীয়ত সদস্য সচিবের সখ্যতা ছিল এমনটি আমিও শুনতেছি ও দেখতেছি। কিন্তু বিষয়টা কতটুকু সত্য যাছাই-বাছাই করে দেখতে হবে। বিগত আওয়ামী লীগের সময় সরকার বিরোধী আন্দোলনে আপনাদের সাথে উনি ছিলেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ময়ূন বলেন, কিছু কিছু সময় ছিলেন।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!