নেত্রকোনা সদর উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রফিকুল ইসলাম (৫৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এসময় লাশ দেখে শোক সইতে না পেরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে পড়লেন তাঁর স্ত্রী রিনা বেগমের (৪৫)।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জেলা শহরের দক্ষিণ সাতপাই এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে কবরস্থানে তাঁদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মারা যাওয়া রফিকুল ইসলাম দক্ষিণ সাতপাই এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি খালিয়াজুরি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের অফিস সহায়ক ছিলেন। তাঁর স্ত্রী রিনা বেগম গৃহিণী ছিলেন।
স্বামীর মৃত্যুর চার ঘণ্টা ব্যবধানে স্ত্রীর হওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এলাকাবাসী ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম ও তাঁর স্বজনেরা সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নে কুনিয়া গ্রামে একটি মাছের খামার ভাড়া নিয়ে মাছ চাষ করেন। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রফিকুল ওই খামারে যান। এ সময় তিনি সেখানে বিদ্যুৎ চালিত মোটর পাম্পের সুইচ দিতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হন। পরে ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রফিকুলকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখান থেকে লাশ সাতপাই বাসায় নিয়ে গেলে স্বামীর লাশ দেখে তাঁর স্ত্রী রিনা বেগম শোক সইতে না পেরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। চার ঘণ্টা ব্যবধানে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
রফিকুল ইসলামের প্রতিবেশী রুবেল তালুকদার বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতাল থেকে রফিকুল ইসলামের মরদেহ বাসায় নিয়ে এলে তাঁর স্ত্রী রিনা বেগম মৃত স্বামীর খাটিয়া ধরে চিৎকার দিয়ে বিলাপ করতে করতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনিও মারা যান।
রফিকুলের ছোট ভাই পান্না ইসলাম বলেন, ভাইয়ের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে ভাবিও স্ট্রোক করে মারা যান। ভাই ও ভাবি পরস্পরকে খুবই ভালোবাসতেন। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। রফিকুলের মৃত্যু নিয়ে কোনো অভিযোগ না থাকায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :