ঢাকা রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫

তাবলীগের চলমান সঙ্কট সমাধান ও হত্যা কান্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন:

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০৭:৪৩ পিএম

তাবলীগের চলমান সঙ্কট সমাধান ও হত্যা কান্ডের  বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন:

ছবি-বর্তমান বাংলাদেশ।

শুরায়ী নিজাম অর্থাৎ মাওলানা জুবায়ের ও ভারতের নিজামুদ্দিন মারকাজের আমির মাওলানা সাদ কান্দলবীর অনুসারী তাবলীগ জামাতের বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্ধ , বৈষম্য সহ চলমান সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানের দাবিতে মৌলভীবাজারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের প্রেসক্লাব হলরুমে সচেতন ছাত্র সমাজের ব্যানারে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও সচেতন ছাত্র সমাজের প্রতিনিধি নাহিদ আহমেদ তাবলীগের চলমান সঙ্কট নিরসনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, তাবলীগ মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক এবং সারা বিশ্বে দাওয়াহ কার্যক্রমের অন্যতম মাধ্যম। আমরা লক্ষ্য করছি যে, সামপ্রতিক বছরগুলোতে তাবলীগের অভ্যন্তরীণ বিভেদ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে যার ফলশ্রæতিতে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটছে। যা দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি শৃঙ্খলার জন্য হুমকি সুরূপ।

এই পরিস্থিতি শুধু তাবলীগ জামাতেরই ক্ষতি করছেনা, বরং বৃহত্তর মুসলিম সমাজের ঐক্য ও সৌহার্দ্যকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা নিবিড় ভাবে  পর্যবেক্ষণ করছি যে তাবলীগ জামাতের বিবদমান পক্ষদ্বয়ের মধ্যে একপক্ষ চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তাই আজকে আমরা আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে সেই বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরতে চাই এবং এর সমাধানে সম্মিলিত প্রচেষ্ঠার আহবান জানাই।

চলমান বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে এই ছাত্র প্রতিনিধি আরও বলেন, শুরাই নেজামের প্রধান মুরব্বিরা ভারত ও পাকিস্তান থেকে নির্বিঘেœ আসতে পারেন। অথচ বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারী মূলধারার তাবলীগ অর্থাৎ মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীদের সর্বোচ্চ মুরব্বী বিশ্ব আমির মাওলানা সাদ বারবার বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন এবং এখনো আসতে পারছেন না। কাকরাইল মসজিদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, কাকরাইল মসজিদ যা তাবলীগ জামাতের প্রধান কেন্দ্রগুলোর একটি। তাবলীগের বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারী মূলধারার তাবলীগ এতদিন যাবত ১৪দিন তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহার করতেন। এভাবে ধারাবাহিক ভাবে একপক্ষ ১৪ দিন আরেক পক্ষ ২৮ দিন কাকরাইল মসজিদ ব্যবহার করতেন যা স্পষ্টত বৈষম্য। কিন্তু বর্তমানে একপক্ষ জোরপূর্বক কাকরাইল মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রেখেছেন যা বৈষম্যের চরম পর্যায়ের প্রতিফলন।

লিখিত বক্তব্যে প্রধান মুরব্বীদের আগমনে বাঁধা,কাকরাইল মসজিদ ব্যবহার,টঙ্গির ইজতেমা ময়দান নিয়ন্ত্রণ, ইজতেমার সময় বরাদ্দ, মসজিদ কেন্দ্রিক আমলে বৈষম্য ও বাঁধা ও পাঁচদিনের জোড় আয়োজনে দেশব্যাপী বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরা হয়। এসব বৈষম্য বন্ধে তিনদফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে, উভয় পক্ষের জোড়, ইজতেমা ও অন্যান্য আমল পরিচালনা নিশ্চিত করা,কাকরাইল মসজিদ,টঙ্গির ইজতেমা ময়দান ও দেশের সকল মসজিদে সমতা নিশ্চিত করা  ও একে অপরের বিরুদ্ধে উস্কানীমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকা এবং ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব হত্যাকারের বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ।  

এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত প্রস্তাবনা বিষয়ে দৃশ্যমান প্রদক্ষেপ না নিলে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর স্থগিতকৃত প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ফের জোরালো ভাবে পালনে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জুয়েল আহমদ, জুবায়েল ইসলাম তারেক, মোঃ আলী আহমদ চৌধুরী,  তাওফিক আহমদ ইলিয়াস, মোঃ আব্দুস সামাদ প্রমুখ।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!