সবার চোখ আটকে যাবে দিগন্তজুড়ে প্রকৃতির অপূর্ব সৃষ্টি মাঠভর্তি হলুদ রঙা সরিষাগাছের দোলা দেখলে। যে কারও মন দুলে উঠবে। ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় সরিষা ক্ষেতগুলোর হলুদ সরিষা ফুল যখন বাতাসে দোল খায় তা দেখে মনে হয় অভ্যর্থনা জানাচ্ছে সড়কের যাত্রী ও পথিককে। আর তাতে মুগ্ধ হচ্ছেন সবাই। সরিষা ফুলের হলুদের সৌন্দর্য্য মানুষ শুধু নয় শস্য শ্যামল বাংলাকেও মুগ্ধ করে হাসি ফোটায় কৃষকের মুখে।
সরষে ফুল, সরষে ফুল, হাওয়ায় হাওয়ায় খেলে দোল, হিম হিম পরশে,ঝিমঝিম নড়ে সে, বালিকার কর্ণে, অপরূপ বর্ণে, খেলে যায় দুল দুল, সরষে ফুল, সরষে ফুল । কবি রুহুল আমীন রৌদ্র তার ‘সরষে ফুল’ কবিতায় জলন্ত প্রমান।
পল্লী কবি জসীম উদ্দিন তার আগমনী কবিতায় লিখেছেন-আরো একটুকা এগিয়ে গেলেই সরষে খেতের পারে, তোমারে আমার যত ভাল লাগে, সে অপুরাগের হলুদ বসন বিছাইয়া আছে দিক দিগন্ত ভরে।
উপজেলায় সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ। শীতের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। যেন সরিষার হলুদ হাসিতে স্বপ্ন দেখছে কৃষক।
গফরগাঁও উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাকুরা নান্নি জানান, চলতি মৌসুমে গফরগাঁও উপজেলায় চরাঞ্চলসহ ১৫টি ইউনিয়নে এবার সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার হেক্টর। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২ হাজার ৮৮৭ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলায় সরিষার ফলনও বেশ ভালো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ফলে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরিষা উৎপাদন করলে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়, ইউরিয়া সারের সাশ্রয় হয়, সরিষা ক্ষেত থেকে মধু উৎপাদন করা যায়। ভোজ্য তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পায় তাছাড়া সরিষার খৈল জৈব সার ও গো-খাদ্যের উপকার করে। সরিষা খেতের সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দেয় প্রজাপতি আর মৌমাছিরা। শীতকালে গ্রামের মাঠে মাঠে এবং চরাঞ্চলে সরিষা ক্ষেতের চোখ জোড়ানো নয়াঅভিরাম দেখতে পাওয়া যায়।
আপনার মতামত লিখুন :