ঢাকায় শনাক্ত হয়েছে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী। গত তিন মাসে ৮ জনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি জানা গেছে। গত বছরও পাঁচজন জিকা ভাইরাসে পাঁচজন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। চিকিৎসা নেওয়ার পর তারা এখন ঝুঁকিমুক্ত।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, দেশে প্রথম ২০১৪ সালে জিকা ভাইরাস শনাক্ত হয়। জিকার কোনও সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। এর চিকিৎসা উপসর্গভিত্তিক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপসর্গ দেখা যায় না।
গবেষকরা বলছেন, জিকার পাশাপাশি ঢাকা শহরে এখন চিকুনগুনিয়ায় অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এর অর্থ ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়া— এই তিন রোগে ঢাকা শহরের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। রোগ তিনটি ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে।
আইইডিসিআর জানিয়েছে, জিকায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম নিতে হবে, প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে, জ্বর ও ব্যথার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে হবে। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে কাছের সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে বা রোগীকে ভর্তি করাতে হবে।
জিকা ভাইরাসের দুটি ধরন আছে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। একটি আফ্রিকান, অন্যটি এশিয়ান। আইসিডিডিআরবি’র গবেষকরা বলছেন, ঢাকায় পাওয়া জিকা ভাইরাসের জিন তারা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, ধরনটি এশিয়ান।
জিকা ভাইরাস সংক্রমণ একটি ভাইরাসজনিত সংক্রামক ব্যাধি। বর্তমানে নতুনভাবে বিস্তার লাভ করা এ রোগটি ১৯৪৭ সালে প্রথম উগান্ডার জিকা নামক বনাঞ্চলের বানরের মধ্যে শনাক্ত হয়। ১৯৫২ সালে উগান্ডা ও তানজানিয়াতে মানুষের মাঝে প্রথম এ রোগের সংক্রমণ ঘটে। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো এটি প্রধানত এডিস মশা বাহিত রোগ। পরবর্তীকালে ১৯৬০ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে এ রোগটি আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে এবং মাইক্রোনেশিয়ার ইয়াপ দ্বীপে ২০০৭ সালে প্রথম বড় ধরনের প্রাদুর্ভাব পরিলক্ষিত হয়। ব্রাজিলে ২০১৫ সাল থেকে চলে আসা জিকা প্রাদুর্ভাব নিয়ে গবেষণা চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি বলে ঘোষণা করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :