যুদ্ধের চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে মধ্যপ্রাচ্যে। আপাতত সব পক্ষ অস্ত্র তুলে রাখলেও যে কোনো সময় বারুদের ঘর্ষণে আবারও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে যুদ্ধ মানে প্রাণহানি আর ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি। এজন্য কম খরচে শত্রুর মোকাবিলায় নানা কৌশল নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে বিভিন্ন দেশ। এতে প্রাণহানি যেমন কমবে তেমন হবে সাশ্রয়ীও।
এরই ধারাবাহিকতায় এবার ইরান নতুন এক অস্ত্র নিয়ে হাজির হয়েছে। সেই অস্ত্রেই বদলে যেতে পারে প্রচলিত যুদ্ধের ধরন। ইরানের রাষ্ট্রয়ত্ত বার্তা সংস্থা মেহের নিউজ জানিয়েছে, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী মঙ্গলবার নিজেদের প্রথম পিনপয়েন্ট লেজার বম্ব সিস্টেম প্রকাশ্যে এনেছে।
ইসরায়েল যে কোনো সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে। সম্প্রতি এক টন ওজনের প্রায় ২ হাজার বোমার একটি চালান ইসরায়েলের জন্য অনুমোদন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমতাবস্থায় সম্ভাব্য হামলার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেই শঙ্কাকে সামনে রেখেই ইরান সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। এতে নিজেদের যুদ্ধ সক্ষমতা কতখানি রয়েছে, তা প্রদর্শনের পাশাপাশি প্রকাশ্যে আনছে নতুন নতুন অস্ত্র।
ইরানের পশ্চিমাঞ্চলে চলা স্থল বাহিনীর চলমান মহড়ার সময় নিজেদের নতুন এই অস্ত্র প্রদর্শন করেছে দেশটি। এই সিস্টেম নিখুঁতভাবে টার্গেটে আঘাত হানতে সক্ষম। আর ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। এমনকি এই অস্ত্র যে কোনো আবহাওয়া এবং ভৌগোলিক অবস্থানের মধ্যে ব্যবহার উপযোগী।
লেজার প্রযু্ক্তিকে সামরিক খাতে ব্যবহারে গেল কয়েক দশক ধরেই গবেষণা চলছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মতো বিভিন্ন দেশ এই প্রযুক্তিতে তৈরি অস্ত্র বানিয়েছে। এসব লেজার অস্ত্র দিয়ে ড্রোন, হেলিকপ্টার, মর্টার শেল ও রকেট ভূপাতিত করা যায়। তবে এসব অস্ত্রের সক্ষমতা খুব বেশি নয়। সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এখন গবেষণা চলমান রয়েছে। এমনকি এ ধরনের লেজার অস্ত্র যুদ্ধবিমানে ব্যবহারের জন্যও কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
রাশিয়াও এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে পিছিয়ে নেই। ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়া স্থলে মোতায়েনযোগ্য লেজার অস্ত্র বানানোর চেষ্টা করছে। এই অস্ত্র একবার সফল হলে শত্রুদের স্যাটেলাইটকে অন্ধ করে দেওয়া যাবে।
তারপরও লেজার প্রযুক্তির সামরিক দিক আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। কেননা মিসাইল বা প্রচলিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে শত্রুপক্ষে হামলা ঠেকাতে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। সেখানে লেজার অস্ত্র দিয়ে আত্মরক্ষা বা হামলায় খরচ হয়েছে মাত্র কয়েক ডলার।
আপনার মতামত লিখুন :