রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে টেস্ট ড্রাইভের কথা বলে টয়োটা হেরিয়ার জীপ গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গাড়ি ও বিদেশি পিস্তলসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির শাহবাগ থানা পুলিশ।
সোমবার (২৪ মার্চ) রাত ৩ টার দিকে গুলশান থানার ৪১ নম্বর রোডের আমারি ঢাকা নামক হোটেলের সামনে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতের নাম আহসান আহমেদ ওরফে মাসুম (৩৬)। এসময় তার কাছে থেকে ছিনতাই হওয়া জীপ গাড়ি, একটি ম্যাগজিনসহ পাঁচ রাউন্ড গুলি ভর্তি বিদেশি পিস্তল ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
শাহবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, পরীবাগ গার্ডেন টাওয়ারে অবস্থিত হইল ডিলস্ (বারভিডা- ১৭৯১) নামক একটি গাড়ির শো-রুমের স্বত্বাধিকারী মাশরুর নাঈর (২৯) জাপানিজ গাড়ির একজন আমদানিকারক ও ডিস্ট্রিবিউটর। গত ৭ মার্চ বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৫ টার দিকে অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি ফোন করে টয়োটা হেরিয়ার জীপ গাড়ি ক্রয় করার জন্য মাশরুর নাঈরের সাথে কথা বলে। কথাবার্তার এক পর্যায়ে মাশরুর নাঈর সেই ব্যক্তিকে তার বাসার গ্যারেজে গাড়ি দেখার জন্য আসতে বলে। পরদিন রাত আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় সেই ব্যক্তি বাসার গ্যারেজে আসে এবং গ্যারেজের বাইরে আরও দুইজন অবস্থান করে। পরবর্তীতে একটি টয়োটা হেরিয়ার জীপ গাড়ি টেস্ট ড্রাইভ দেওয়ার জন্য মাশরুর নাঈরের চাচাত ভাই মো. পিয়াল মাহমুদকে নিয়ে সেই অজ্ঞাতনামা তিনজন ব্যক্তি গাড়িটিতে উঠে। তারা গাড়িটি চালিয়ে রাত আনুমানিক রাত ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে শাহবাগ পিজি হাসপাতালের সামনে মেট্রোরেল স্টেশনে আসে। তখন গাড়িটি থামিয়ে তাদের একজন পিয়াল মাহমুদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি নিয়ে চলে যায়। জীপ গাড়ির আনুমানিক মূল্য ৮৫ লক্ষ টাকা। ঘটনার কিছুক্ষণ পর ছিনতাইকারীরা মাশরুর নাঈরের হোয়াটসএ্যাপে একটি বার্তা দিয়ে মামলা না করার জন্য ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। এ ঘটনায় গাড়ির মালিক মাশরুর নাঈরের অভিযোগের ভিত্তিতে শাহবাগ থানায় গত ৯ মার্চ একটি মামলা রুজু করা হয়।
থানা সূত্রে আরও জানায়,মামলাটি তদন্তকালে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করা হয়।
সোমবার (২৪ মার্চ) রাত আনুমানিক ৩ টার দিকে গুলশান থানার ৪১ নম্বর রোডের আমারি ঢাকা নামক হোটেলের সামনে অভিযান পরিচালনা করে আহসান আহমেদ ওরফে মাসুমকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আহসান আহমেদ ওরফে মাসুম বুয়েটের একজন সাবেক শিক্ষার্থী এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে অত্যন্ত দক্ষ। সে একজন পেশাদার অপরাধী। এর আগে ছিনতাইসহ এরকম বহু অপরাধের সাথে সে জড়িত ছিল বলে স্বীকার করেছে। সে গাড়ি ছিনতাই করে নিয়ে পরবর্তীতে গাড়ির মালিকদের কাছে গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ দাবি করতো। গ্রেফতারকৃত মাসুমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় গাড়ি ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :