ফেব্রুয়ারিতে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার বিষয়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অথচ তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। যতদিন তাদের বিচার না হবে, ততদিন পর্যন্ত তাদের কোনো কর্মকাণ্ড চালাতে দেওয়া হবে না।
এ সময় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন মামলার বিষয়েও কথা বলেন প্রেস সচিব। তিনি দাবি করেন, সরকার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করেনি, করেছে বিভিন্ন ভিকটিমের পরিবার। এক্ষেত্রে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের প্রতিবেদনে ভুল তথ্য দিয়েছে। আমরা তাদের বলব ভুল সংশোধন করতে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা হচ্ছে এবং অন্যায়ভাবে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
এর আগে, নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এক পোস্টে আওয়ামী লীগের ডাকা কর্মসূচির কড়া সমালোচনা করেন শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যদি গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড ও দুর্নীতির জন্য ক্ষমা না চায়, যতক্ষণ না তাদের দোষী নেতাকর্মীদের বিচারের মুখোমুখি না হয় এবং যতদিন পর্যন্ত দলটির বর্তমান নেতৃত্ব ফ্যাসিবাদী আদর্শ থেকে আলাদা না হয়ে আসে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া সম্ভব না।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘মিত্রবাহিনী কি নাৎসিদের প্রতিবাদ করতে দিয়েছিল?’
পোস্টে তিনি লিখেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদ বন্ধ করেনি। গত সাড়ে পাঁচ মাসে শুধু ঢাকাতেই অন্তত ১৩৬টি প্রতিবাদ হয়েছে। এর কিছু প্রতিবাদ ব্যাপক যানজটের কারণ হয়েছে। তবুও, অন্তর্বর্তী সরকার কখনো প্রতিবাদে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেনি।
জুলাই আগস্টের হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, জুলাই ও আগস্ট মাসের ভিডিও ফুটেজ স্পষ্টভাবে দেখায়, আওয়ামী লীগের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের হত্যাকাণ্ডে জড়িত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগই জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার জন্য দায়ী।
তিনি প্রশ্ন রাখেন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ দলকে কি প্রতিবাদের সুযোগ দেওয়া উচিত?
প্রেস সচিব লিখেন, বিশ্বের কোনো দেশই খুনি ও দুর্নীতিবাজদের পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসার সুযোগ দেয় না। অন্তর্বর্তী সরকারও দেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতিনিধিত্ব করে এবং হত্যাকারীদের নেতৃত্বে যে কোনো প্রতিবাদকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। আমরা দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিতে পারি না। আওয়ামী লীগ ও তাদের ব্যানারে অন্য কেউ অবৈধ প্রতিবাদ করতে চাইলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রেস সচিব লিখেন, হাসিনার একনায়কতন্ত্রে প্রায় ষাট লাখ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ভুয়া ও গায়েবি মামলা দেওয়া হয়। এমনকি দেশের প্রথম হিন্দু প্রধান বিচারপতিকেও নির্মমভাবে মারধর করা হয়, পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় এবং নির্বাসনে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ফেব্রুয়ারি মাসে একগুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি বাংলা বলছে, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :