সিলেটে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হু হু করে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। এরই মধ্যে সুরমা, কুশিয়ারা, ডাউকি, সারি গোয়াইন নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এতে সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের সন্ধ্যা ৬টার তথ্য অনুযায়ী, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৯৫ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপদসীমার ১ দশমিক ২ মিটার ওপরে।কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পানি ১৬ দশমিক ৬০ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপদসীমার শূন্য দশমিক ৭২ মিটার ওপরে। সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ২৬ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপদসীমার শূন্য দশমিক ৯২ মিটার ওপরে। ডাউকি নদীর জাফলং পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৪১ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপদসীমার শূন্য দশমিক ৯৪ মিটার ওপরে। সারি গোয়াইন নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৪১ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপদসীমার শূন্য দশমিক ১২ মিটার ওপরে। তাছাড়া জেলার লোভা, ধলাইসহ সব কটি নদ-নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলার কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে অনেক রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে। অনেকের ঘরে ভেতরেও পানি ঢুকে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন নিম্নাঞ্চল এলাকার মানুষ।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কিছু গ্রামের বাড়িঘর প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি সড়কও ডুবেছে। ইতোমধ্যেই ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে কিছু মানুষ এসে উঠেছেন। তাছাড়া পাহাড়ি ও টিলা এলাকার পাদদেশে বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে উপজেলা প্রশাসন অনুরোধ জানাচ্ছে।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, পাহাড়ি ঢল টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। তাছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পাশাপাশি জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীন বলেন, উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে সুরমা ও লোভা নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে তা মোকাবেলায় উপজেলার সবকটি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। তাই স্বল্প মেয়াদি বন্যার ঝুঁকিও বাড়ছে। ইতোমধ্যেই জেলার অন্তত ৫টি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আরও কিছু পয়েন্টে পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এ ভাবে পানি বাড়তে থাকলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :