গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার উজিলাব গ্রামে একটি পরিবারের ৮ জন সদস্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। পরিবারের উপার্জনক্ষম কেউ না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
পরিবারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ৮ জন হলেন- আমির হোসেন (৪৭), তার স্ত্রী শিউলি আক্তার (৩৫), আমিরের বোন নাসরিন আক্তার (৩৪), হাসিনা আক্তার (৩২), হাসিনার সন্তান রূপা আক্তার (১৪) ও মারুফ মিয়া (২), আমিরের ভাই জাকির হোসেন (২৮), জাকির হোসেনের সন্তান জোনাকি আক্তার ঝিনুক (১০)।
জানা যায়, এই পরিবারের সদস্যরা জন্ম থেকেই চোখের সমস্যায় ভুগছেন। তারা কেউ চোখে কম দেখেন, কেউ দেখতেই পান না।
আমির হোসেনের মা রাশিদা বলেন, ‘আমার স্বামী হোসেন আলীর মধ্য বয়সে হঠাৎ একদিন জ্বর হয়। পরে তার এক চোখ অন্ধ হয়ে যায়। তিনি জীবিত থাকাকালীন কোনোমতে পরিবারের সদস্যদের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দিতে পারলেও এখনে হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি।
আমির হোসেন বলেন, ‘করোনা মহামারিতে আমি অনেকটা ঘরে বসা। আগে হাটে-বাজারে, পথে-পথে ঢোল বাজিয়ে গান গেয়ে কিছুটা উপার্জন করতাম। কিন্তু করোনার পর আর লোকজন তেমন জমায়েত হয় না, আমার গানও শুনে না। কোনো আয় নেই।
জাকির হোসেন বলেন, ‘গ্রামের একটি মুরগীর মাংস প্রসেসিং করার কারখানায় চাকুরী নিয়েছিলাম। কিন্তু চোখে ভালো দেখতে না পাওয়া কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাকে কাজ থেকে বাদ দিয়ে দেয়। এখন আমি বেকার।
হাসিনা বলেন, ‘আমার দুই সন্তানই অন্ধ। অর্থের অভাবে সন্তানদের চিকিৎসা দিতে পারছি না। ভাবতেও পারছিনা ওদের ভবিষ্যৎ কি হবে।
নাসরিন বলেন, ‘আমার ছেলে সিফাতও জন্মের সময় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েছিল। ছয় মাস বয়সে এক ব্যক্তির সহায়তায় তার চিকিৎসা করাই। এরপর কিছুটা দেখতে পেলেও এখনো দূরের কিছু দেখে না।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, এক পরিবারের ৮ সদস্যই জন্মান্ধ এ বিষয় টা আমার জানা ছিল না।খবর নিয়ে তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :