ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

ইসকন ও এর পেছনের গল্প

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২৪, ০৪:১৩ পিএম

ইসকন ও এর পেছনের গল্প

ইসকন নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাস গ্রেফতারের পর থেকে চট্টগ্রাম বেশ উত্তাল। তাকে আদালতে উঠানোর পর থেকে হামলা, সংঘর্ষ এমন কি হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসকন নিয়ে বেশ সমালোচনার ঝড়র বইছে ।

তবে আপনি কি জানেন ইসকন কি? কি বা এর ইতিহাস। তবে এই প্রতিবেদন আপনার জন্য। উইকিপিডিয়ার থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানাবো ইসকন সম্পর্কিত কিছু তথ্য।

ইসকন কি?

ইসকন শব্দের পূর্ণরূপ ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস বা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। এটি মূলত হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। যা গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতবাদের অনুসারী। ১৯৬৬ সালে নিউ ইয়র্ক শহরে অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। ইসকনের মূল ধর্ম বিশ্বাস, সনাতন বা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় গ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবত, ভগবদ্গীতা ও অন্যান্য বৈদিক শাস্ত্রসমূহের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। আধ্যাত্মিক সমাজে এটি ‘হরেকৃষ্ণ আন্দোলন’ নামেও ব্যাপক পরিচিত।

ইসকনের ইতিহাস।

১৯৬৫ সালের দিকে ৭০ বছর বয়সে নিউইয়র্কে পারি জমান স্বামী প্রভুপাদ। তিনি মূলত পাশ্চাত্যবাসীর মধ্যে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রচারের লক্ষ্যে নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন। পরের বছর তিনি ইসকন প্রতিষ্ঠা করেন। একই সঙ্গে বৈদিক দর্শনের গ্রন্থাবলি প্রকাশ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত করেন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গ্রন্থ-প্রকাশনী সংস্থা ‘ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট।

অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ । ছবি: সংগৃহীত 

ইসকনের মূল উদ্দেশ্য কী?

শুরুতেই বলা হয়েছে এটি গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতবাদের অনুসারী। গৌড়ীয় বলতে বোঝায় এটি গৌড় অঞ্চলে উৎপত্তিস্থল। আর বৈষ্ণব অর্থ বিষ্ণুর উপাসক। আর বিষ্ণু হলেন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একজন দেবতা। ভক্তিযোগ অনুশীলন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপাসনা ও হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ বা পাঠ করা ইসকনের মূল উপজীব্য বা উদ্দেশ্য।

ইসকনের কেন্দ্র ও যেসব দেশে এর সদস্যরা রয়েছে।

২০০৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে ইসকনের ৫০ হাজারেরও বেশি মন্দির এবং কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি খামার সংগঠন, ৫৪টি বিদ্যালয় ও ৯০টি ভোজনালয়। বর্তমানে পূর্ব ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্য এশিয়া ও ভারত উপমহাদেশে এই সংগঠনের সদস্য উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কেনিয়ার মোম্বাসায় ইসকন মন্দির। ছবি: সংগ্রহীত 

নীতি, উৎসব ও প্রচার

ইসকনের নীতির মধ্য রয়েছে এই সংগঠনের ভক্তরা নিরামিষ খাবারকে শ্রী কৃষ্ণের প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করেন। এর বাইরে নেশা গ্রহণ বা সেবন, জুয়া খেলা এবং অবৈধ যৌন সংগম হতে বিরত থাকাকে নীতি হিসেবে ধারণ করেন। ইসকন দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক পূজার বাইরেও এই সংগঠনের ভক্তরা জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমী,  গৌর পূর্ণিমা, একাদশী, হোলি, রাম নবমী, রথযাত্রা এবং গীতা জয়ন্তী সহ বিভিন্ন ধরনের হিন্দু উৎসব উদ্‌যাপন করেন। ইসকন ধর্ম প্রচারের পক্ষে তাদের সদস্যরা প্রাথমিকভাবে প্রকাশ্য স্থানে হরে কৃষ্ণ মন্ত্র গেয়ে এবং বিভিন্ন ভাষায় বৈদিক বই বিক্রি করে কৃষ্ণ চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!