ঢাকা সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

শ্রীমঙ্গলে ৭০টি বিদ্যালয়ে নেই নিয়মিত প্রধান শিক্ষক

মনজু বিজয় চৌধুরী, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫, ০৮:১৭ পিএম

শ্রীমঙ্গলে ৭০টি বিদ্যালয়ে নেই নিয়মিত প্রধান শিক্ষক

ছবি-বর্তমান বাংলাদেশ।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৭০টি বিদ্যালয়ে নেই নিয়মিত প্রধান শিক্ষক। এর মধ্যে ৩৫ জন প্রধান শিক্ষক পদমর্যাদা নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে। ৩৫টি বিদ্যালয়ে সহকারী থেকে প্রধান পদে পদোন্নতি কার্যক্রম জটিলতায় অথবা নিয়োগ না হওয়ায় আটকে রয়েছে প্রধান শিক্ষক পদায়ন। শুধু তাই নয়, উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের ২২টি পদও রয়েছে ফাঁকা। সব মিলিয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা খাতের হ-য-ব-র-ল অবস্থা। এ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় রয়েছে ১৩৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। মামলা, পদোন্নতি জটিলতা ও নিয়োগ বা পদায়ন না হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের ৭০টি পদ শুন্য থাকায় সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। এমনকি ৭টি বিদ্যালয়ে চলতি দায়িত্বে রয়েছেন শিক্ষকরা। ফলে অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষক স্বল্পতার কারনে স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বা পদোন্নতি না হওয়া এবং নব জাতীয়করণকৃত কিছু বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ নিয়ে উচ্চ আদালতে দায়েরকৃত রিট পিটিশনের কারনে চলতি দায়িত্ব প্রদান ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে চালানো হচ্ছে বিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনিক কার্যক্রম। ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে শ্রীমঙ্গলের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায়।


শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, শ্রীমঙ্গলে উপজেলায় মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৩৮টি। এরমধ্যে ১৯৭২ সালে জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয় ৬৬টি, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে তিন দফায় জাতীয়করণ করা হয় ৬৯টি বিদ্যালয় এবং বিদ্যালয় বিহীন এলাকায় ১৫০০ প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মাণ করা হয় আরো ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।


৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ শুন্য রয়েছে। বাকি ৬৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত প্রধান শিক্ষক রয়েছেন।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, উপজেলার ১৩৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭০টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শুন্যতার কারণে সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে চাকরীর মেয়াদের সিনিয়র কাউকে ওই বিদ্যালয়গুলোতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। প্রতিনিয়তই প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে।


শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে ২০১৭ সাল থেকে পদোন্নতি এবং নতুন নিয়োগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। উপজেলার ৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শুন্য থাকার কারণে সহকারী শিক্ষকদের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়েছে। অনেক সহকারী শিক্ষককে একই সময়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।


প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি শিঘ্রই সমস্যাটি সমাধান হবে এবং শুন্যপদ পূর্ণ করা হবে। তবে মামলার জটিলতা এবং অন্যান্য কারণে শুন্য পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে।’

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!