১ টাকায় চা আর ১টাকায় পেঁয়াজু! খানিকটা অবাক লাগার মতই। আপন আহম্মেদের ‘ভাই ভাই টি স্টোর’ গেলেই মিলবে ১ টাকার চা-পেঁয়াজু। ব্যতিক্রমী এই দোকানটির দেখা মিলেছে নীলফামারীর সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের সন্ন্যাসীতলা বাজারে।
এভাবেই চালিয়ে আসছেন টানা দুই যুগের বেশী সময় ধরে। দাম কম রাখলেও গুণমানে কোনও আপোষ করেননি ‘ভাই ভাই টি স্টোর’ স্বত্বাধিকারী আপন আহম্মেদ। ২০২৩ সালে জেলার শ্রেষ্ঠ খাদ্য ব্যবসায়ী হিসেবে `কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ `সিআরবি` কনজিউমার এ্যাওয়ার্ড` অর্জন করেন।
ক্রেতারা জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এই সময়ে বাজারে এক টাকা দিয়ে একটা চকলেট পাওয়া যায়না, সেখানে ১ টাকায় প্রতি কাপ চা ও প্রতি পেঁয়াজু পাওয়া যাচ্ছে। দাম কম হলেও তার দোকানের চা ও পেঁয়াজু খুবই সুস্বাদু। আপনের এই ব্যতিক্রমী চা ও পেঁয়াজুর স্বাদ নিতে দূর দূরান্ত থেকে ক্রেতারা নিয়মিত ভিড় করেন সন্নাসীতলা বাজারে।
আপন আহম্মেদ জানান, সকালে নিজের কৃষিজমিতে কাজ করে বিকেলে দোকানের কার্যক্রম শুরু করি। বেচা-বিক্রি চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। প্রতিদিন ২০ কেজি ডালের পেঁয়াজু বিক্রি হয়।
এই এক টাকায় চা- পেঁয়াজু বিক্রির পেছনে একটি গল্প জানালেন আপন। তিনি বললেন, আমি এ ব্যবসা শুরু করেছি ১৯৯৫ সালে, তখন আমি এসএসসি পরীক্ষা দিই। তখন এ বাজারে কয়েকটি দোকান ছিল। সেসময় বাজারে এক লোকের দোকানে চা-বিস্কিটসহ ছয়টাকা বিল হয়েছিল। কিন্তু তার কাছে ৫ টাকা ছিল। ১ টাকা দিতে না পারায় দোকানদার ওই লোককে গলাধাক্কা দিয়ে বাজার থেকে বের করে দিয়েছিল। সেই বিষয়টি আমি অনুভব করেছি। সেখান থেকে পরিকল্পনা করা যে অল্প টাকায় কীভাবে লোকজনকে খাওয়ানো যায়, সেই চিন্তা থেকে নামমাত্র মূল্যে আমি এক টাকায় চা এবং এক টাকায় পেঁয়াজু বিক্রি করি। অনেক অসহায় মানুষকে ফ্রিও খাওয়াই।
ব্যবসার পুঁজি কম হওয়ায় এক লক্ষ টাকা ঋন নিতে হয়েছে। দিনে ৭-৮ হাজার টাকার মতো বিক্রি হয় এ থেকে যা লাভ হয় তা দিয়ে ঋনের কিস্তি, সংসার ও দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচ চলে। কোনো মাধ্যম হতে আর্থীক সহযোগীতা পেলে স্বাচ্ছন্দের সাথে সারাজীবন ১টাকায় চা-পেঁয়াজু বিক্রি করবেন বলে তিনি জানান।
আপনার মতামত লিখুন :